একদিন কিছু সংখ্যক মুশরিক লোক, যারা মুশরিক অবস্থায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, যেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল, তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, আপনি যা বলেন এবং যে দিকে আহবান করেন তা খুবই উত্তম। তবে আমাদেরকে বলুন, অতীত জীবনে আমরা যে সমস্ত মন্দ কাজ (গুনাহ) করেছি তা মুছে যাবে কিনা?
অমুসলিমদের অতীত জীবনের গুনাহ মাফ হওয়া প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদিস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন। যা মুসলিমদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসটি এখানে তুলে ধরা হলো-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ نَاسًا، مِنْ أَهْلِ الشِّرْكِ قَتَلُوا فَأَكْثَرُوا وَزَنَوْا فَأَكْثَرُوا ثُمَّ أَتَوْا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا إِنَّ الَّذِي تَقُولُ وَتَدْعُو لَحَسَنٌ وَلَوْ تُخْبِرُنَا أَنَّ لِمَا عَمِلْنَا كَفَّارَةً فَنَزَلَ { وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا} وَنَزَلَ { يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لاَ تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ{ .
হজরত ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, একদিন কিছু সংখ্যক মুশরিক লোক, যারা মুশরিক অবস্থায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, যেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল, তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, আপনি যা বলেন এবং যে দিকে আহবান করেন তা খুবই উত্তম। তবে আমাদেরকে বলুন, অতীত জীবনে আমরা যে সমস্ত মন্দ কাজ (গুনাহ) করেছি তা মুছে যাবে কিনা? (তাহলে আমরা ইসলাম গ্রহণ করবো)। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হলো-
‘এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের ইবাদাত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতিত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে। (সুরা ফুরক্বান : আয়াত ৬৮)
আরও অবতীর্ণ হলো- ‘বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা যুমার : আয়াত ৫৩) (মুসলিম)
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, কোনো অমুসলিম যদি উক্ত অন্যায়গুলো করার পর ইসলাম গ্রহণ করে তবে আল্লাহ তাআলা তাদের ক্ষমা করে দিবেন। শুধু অমুসলিমদের এসব গুনাহই নয় বরং কোনো মুসলিম যদি কোনো গুনাহ করার পর ক্ষমা পাওয়ার শর্তগুলো পূর্ণ করে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তবে মহান আল্লাহ মুসলিমদেরও ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং এর উপর অটল থাকাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়। কারণ আল্লাহ তাআলাই বলেছেন, তাঁর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়ার জন্য।
আর যারা মুসলিম এবং ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছে, তারাও যত অন্যায় ও পাপ করুক না কেন, যদি তাওবা করে আর গুনাহ না করার ওয়াদা করে আল্লাহ কাছে ক্ষমা চায় এবং উক্ত হাদিস মোতাবেক আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা করে, আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকেও অতীতের সকল গুনাহ থেকে ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের কবুল করুন। আমিন