অস্ট্রেলিয়ায় গবেষণা করতে গিয়ে এক বছরের কোর্সকে তিন বছরের কোর্স হিসেবে উল্লেখ করে দুই লাখ টাকা আত্মসাৎকারী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম মতিনুর রহমান উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি নিয়োগ তদবিরে এগিয়ে রয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, একেএম মতিনুর রহমান ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স অব সায়েন্স কোর্সে (এমএস) এক বছরের জায়গায় তিন বছর দেখিয়ে মোট তিন লাখ টাকা উত্তোলন করেন। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী এক বছরের জন্য প্রায় এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তিনি এক বছরের পরিবর্তে তিন বছর সময় দেখিয়ে মোট দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।
অথচ একই প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা এমএস কোর্সে এক বছরের জন্য এক লাখ টাকা উত্তোলন করেছে। যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রদানকৃত তথ্য বিবরণীতে দেখা গিয়েছে।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে তদন্ত কমিটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলেও তা এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
অনেক শিক্ষকের দাবি, মতিনুর রহমান তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ঘুষ প্রদান করে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ না করার জোর তদবির চালান।
ড. মতিনুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্সেও ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিল এবং তাঁকে বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্সের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল বলে লোক প্রশাসন বিভাগের এক সিনিয়র অধ্যাপক জানিয়েছেন।
একের পর এক অনিয়ম, দুর্নীতি, বিভাগীয় পরীক্ষায় ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট করে মেয়ে শিক্ষার্থী’র সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, মদখেয়ে মাতলামী, পিএইচডি অভিসন্দর্ভ জালিয়াতিসহ অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত এই অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কোন দায়িত্বে নিয়োগ না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
এরকম দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন দায়িত্ব প্রদান করলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে ভোগ-বিলাসের জায়গায় পরিনত করবে বলে তারা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ড. মতিনুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।